বেশ সুখে ছিল বাংলা সংসদের অমুক নং পাতায় অথবা জীবনের সাফিক্সে। হঠাৎ করে শব্দটি বেশ বিতর্কিত হয়ে উঠেছে কিছু আয়েসি মানুষের মুখে মুখে । আজ্ঞে আমি বলছি "যাপন" শব্দটি ঘিরে । বাংলা লেখালিখির জগতে কিদানিং (ভুল নয়) কি জানি কি সুত্রে কিছু বিশিষ্ট লেখক শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন তাপ্পর থেকে তাকে ধরে এত টানাটানি যে "যাপন" আপন বাপন চৌকি চাপন করে মনে হয় বিছানা ছাড়ছে না। শুধু লোকজনের মুখ ঝামটা খেয়ে খেয়ে শুয়ে পড়েছে। উৎপাত টা এখান থেকে, কেউ বলেছিল, কিচ্ছু একটা বমি করতে গেলে সেটা তো আগে খেতে হবে, মানে যদি কোনো সাই বাবা / মা গোছের না হও তাহলে যা পেট থেকে বেরোবে তা পেটে ধারণ করাটা আমাদের মত মাগল (রাউলিংচিত) দের মতে স্বাভাবিক। এখন এই ধারণ করতে গেলে বিচরণ করাটাও স্বাভাবিক। এই বিচরণ কিভাবে ? পদব্রজে নাকি বজরায় নাকি সব কিছু ছাড়ি যদি মন নিয়ে করি ঘোরাঘুরি । মোদ্দা কথা এই যে তা কোনো ভাবে ছুঁয়েছে তবেই তো কালি ধুয়েছে। এখন এই ধো ডালা ব্যাপার কারুর সার্ফ এক্সেল সম, কারুর সফেদ সম কারুর লাগালাগা দাগ লাগা আর কারুর জামাটাই ডিসকার্ডেড।
যাকগে কথা হচ্ছে ওই ডিসকার্ডেড যাপন 'নিয়েই'। এই যাপনের ইন্টারপ্রিটেশনে, প্রিসিশন নিয়ে এতো হল্লাগল্লা যে মূল ব্যাপারটাই মাঝপথ থেকে ছুমন্তর। একটা ঘটনা গ্রামে বা নন্দীগ্রামে বা বাসে ট্রামে যেখানেই ঘটুক, বলছি দরকার নেই সেই গ্রামের ১৪নং ওয়ার্ডের ১৫ নং বাড়িতে গিয়ে দেখে এসে লিখতে হবে, কিংবা সেই ভীড় বা খালি বাসে উঠে ঘটনা ছানাবড়া চোখ নিয়ে দেখে এসে কাব্য ফলাতে হবে । কিন্তু যখন কাব্য ফলালে তখন সেই ফলাহারে যদি মনে হয় দই, মিষ্টি, ইত্যাদি কম পড়িয়াছে বা নাইইইইই আর ডট কমের দৌলতে তুমি সেই চিনিকমের পাবলিসিটি করবার জন্য ট্যাগ তাক করে বসে আছ,আর যৎপরনাস্তি চেষ্টা চালাচ্ছ এটা বোঝাবার যে "তোমার "কাব্যিক" অভিব্যাক্তি" ভুক্তভোগীর চেয়েও জ্বালাময়/ময়ী এবং একবার নয় বারংবার এই জ্বালার ধোঁয়া উঠে চোখে মুখে ঢোকাতেই থাকবে এবং ইত্যাদি ঘটবার সময় আমার কেন জ্বলবে? বয়সের দোষ। মনে হয় যা কিছু দেখলেই জ্বলে।
আর জ্বললেও, মুখ কেন খুললে! ইদানিং ব্যাপারটা রপ্ত করেছি 'দেখিয়া না জানিবার, আর শুনিয়া না বলিবার' আদব কায়দাকেই সুখে থাকা বলে। কিন্তু লেখা, ওটারো আবার একটা কথা আছে 'ভাবিয়া না লিখিবার'। কিন্তু সুখে থাকতে ভূতে কিলোলে, যা হয় আর কি, আমি লিখে ফেল্লুম।
অগত্যা আমার "যাপনের" দোষে এই লেখাখানি, কারন আমার জীবনে ভাব প্রকাশটাই এখন একটা দোষ "যাপন"। যাকগে এই আন্তাবড়ি লেখাটা আবার কি মর্মস্পর্শী নাটকীয়তা নিয়ে আসবে জানিনা। "যাপন" শব্দটা একটু শান্তিতে ঘুমোবে কিনা তাও জানিনা।
অন্তিম শ্বাসে এটাই বলার যে মহোদয় ও মহোদয়াগন, যাপন কোনো বিজ্ঞাপন নয়, ভীষন একান্ত। বিশেষত যখন সেই যাপন উঠে আসছে আপনার কলমে। কিভাবে সেই যাপন তা নিয়ে মাথাব্যাথা কারুর নেই। মাথাব্যাথা উঠে আসা লেখাখানি নিয়ে। বাকি সবকিছু ইগনোর ডট কমে পুস্পাঞ্জলি দিয়ে আমি লেখাটা সাবমিট করলুম। সক্কলে বেজায় ভালো থেকো।